Swadesh Chitro
  • ঢাকা মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর, ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২
banner

বাঙালির রসনায় দুর্গা উৎসব


FavIcon
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২৪, ০৮:৪৬ পিএম
বাঙালির রসনায় দুর্গা উৎসব
বাঙালির রসনায় দুর্গা উৎসব

হিন্দুদের অন্যতম বড় উৎসবই দুর্গাপূজা। আর উৎসব মানেই নানান খাবার দাবারের ধুম লেগে যায়। শুরু হয় খাবার নিয়ে নানান আয়োজন।

বাঙালির রসনায় দুর্গা উৎসব আয়োজনে মেতে ওঠে বাড়ি থেকে শুরু করে পূজা মণ্ডপ পর্যন্ত। পূজা মানেই নানান খাবারের পসরা। প্রত্যেকটা মানুষ বাধাহীনভাবে মেতে উঠে নানান  খাবার খাওয়ার জন্য। কারণ পূজায় যে এই সাবেকি খাবার দাবারের আয়োজন হয় তা অন্যসময় একদমই হয় না। 

সাধারণ খাবার দাবারের থেকে দুর্গাপূজার খাবার দাবারে থাকে বেশ কিছু ভিন্নতা। বেশ অন্য ধরনের খাবার তৈরি করা হয় দুর্গাপূজার সময়। বেশিরভাগ সময় নিরামিষ খাবারকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। তবে এর মানে এই না যে কেউ আমিষ খেতে পারবে না। তবে বিশেষ করে নবমী পর্যন্ত নিরামিষ খাওয়ায় নিয়ম রয়েছে।

দুর্গা

এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বাড়িতে কিংবা পূজা মন্ডপে একটা লিস্ট করা হয় কোন দিন কোন সময় কি কি খাবার দাবার দেওয়া হবে। বাকি কি কি খাবার দাবারের আয়োজন করা হবে। তবে পুজোর সবচেয়ে কমন খাবার হচ্ছে মিষ্টি জাতীয় খাবার। 

কেমন হবে পুজোর দিনের খাবার গুলো বলুন তো? আগে থেকে কি কোন পূর্ণ পরিকল্পনা আছে তবে না থাকলে তা করে ফেলাই ভালো: 

সকালের দিকে দই, চিড়া, মুড়ি, মিষ্টি, খই, নারিকেল এইসব দিয়ে একত্রে একটি খাবার তৈরি করে পরিবেশন করা যেতে পারে। এছাড়াও লুচি, বুটের ডাল সাথে পাঁচ তরকারি সাথে নানা রকমের হালুয়া এ ধরনের খাবার গুলো হালকার মধ্যে সকালের জন্য বেশ ভালো একটা নাস্তা হতে পারে। তবে অনেকে পূজার সময় মন্ডপে সকালের প্রসাদ গ্রহণ করে থাকে সেই ক্ষেত্রে তাদের নাস্তার পরিকল্পনাটা ভিন্ন থাকে। এছাড়াও পূজাকে কেন্দ্র করে নানা রকম ফল, পাঁচ মিষ্টি ও হরেক রকম সন্দেশ খাওয়ার প্রচলন রয়েছে।

দুপুরের ভোজে নানা ধরনের আয়োজন করা হয়। বিশেষ করে সবজি পোলাও ও লাভরা খিচুড়ি সবচেয়ে জনপ্রিয় দুর্গাপূজা মধ্যাহ্ন ভোজ হিসাবে। বাসন্তি পোলাও সাথে সয়াবিনের তরকারি খুব জনপ্রিয় দুর্গাপূজার মধ্যাহ্ন ভোজের সময়। এছাড়াও খিরসা, পায়েশ এই ধরনের মিষ্টি জাতীয় খাবারের আয়োজন করা হয়ে থাকে। দুর্গাপূজার সময় মূলত মধ্যাহ্ন ভোজকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। এই সময় চেষ্টা করা হয় একটু ভিন্ন ধরনের সুস্বাদু কোন খাবার তৈরি করার। আর তাই দুর্গাপূজার মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন শুরু হয় খানিকটা সকাল থেকেই। 

দুর্গা

বিকালের দিকে ঝাল ঝাল নানান ধরনের খাবার খাওয়ার জন্য মনে সাড়া দেয়। মুচমুচে,  কুড়মুড়ে ধরণের খাবারই বিকেলের নাস্তার জন্য চাহিদার অন্যতম শীর্ষে।  বন্ধু-বান্ধব সকলে মিলে বিকালের নাস্তায় নানান ধরনের খাবার যেমন - ফুচকা, ঝালমুড়ি, পুরি, সিঙ্গারা, নানা ধরনের ভাজা জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করে। 

রাতের দিকে একটু হালকা খাবারের আয়োজন করাই ভালো। তবে পূজার সময় রাতে যেহেতু বাইরে বেশ অনেকটা সময় ঘোরাঘুরি করা হয় অনেকেরই পরিকল্পনা থাকে রাতের খাবারটা বাইরে খাওয়ার বিশেষ করে নবমীর রাত থেকে জম্পেশ বিরিয়ানি খাওয়ার হয়ে থাকে বাঙালি। তবে বিভিন্ন মন্ডপের আশেপাশের দেখা যায় নানা ধরনের হওয়াই মিঠাই, মিষ্টি জাতীয় খাবার, আইসক্রিম এই ধরনের নানা রকম স্টল নিয়ে বসার জন্য। কাই রাতে ঘোরাঘুরির ক্ষেত্রে মানুষের এই ধরনের খাবার গুলোই বেশি খাওয়া হয়ে থাকে।

দশমীর খাবারের ক্ষেত্রে একটু ভিন্নতা আসে। বেশিরভাগ হিন্দুদেরই দশমীর দিন ইলিশ মাছ খাওয়ার একটি নিয়ম রয়েছে। তাই সেই প্রথাকে কেন্দ্র করে দশমীর দিন বেশিরভাগ বাসায় ইলিশ মাছ রান্না করা হয়ে থাকে। এছাড়াও সবারই সাথে মিষ্টি মুখের মাধ্যমে বিজয় দশমী উদযাপন করা হয়ে থাকে। অনেকের কাছে বিজয়া দশমী মানেই লাড্ডু খাওয়া। মতিচুর লাড্ডু, ঘি এর লাড্ডু, তেলের লাড্ডু, বাদামের লাড্ডু, তিলের লাড্ডু নানা ধরনের লাড্ডুর সমাহার দেখা যায়।

দুর্গা

পরিবেশনের সমাচার: 
এই যে খাবারের এত সুন্দর, সুস্বাদু ও সুগন্ধময় আয়োজন শুধু করলেই হবে সেগুলোকে ঠিকমতো সাজাতে হবে না তাই সাজানোর জন্য অবশ্যই ডাইনিং টাকে খুব সুন্দর পরিচ্ছন্ন এবং রঙিন করে তুলতে হবে। খাবার শুধু দেখতে ভালো হলে বা খেতে ভালো হলেই হয় না।  খাবার খাওয়ার রুচি অনেকটা নির্ভর করে পরিবেশনার উপর। কারণ পূজার সময় ঘরে যদি রঙিন আমেজ না থাকে ঠিক পূজা পূজা মনে হয় না। এছাড়াও চেষ্টা করতে হবে ঘরে যাতে এই সময় কাঁচা ফুল থাকে কিংবা খাবার পরিবেশনার সময় আশেপাশে যাতে কাঁচা ফুল দিয়ে টেবিলটির সাজানো যায়। সেই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে এবং এই সময় স্টিল, মাটি, তাম্য, কাশার বাসন কুশন ব্যবহার করলেই পূজার সৌন্দর্য আরো দ্বিগুণ হারে। এছাড়াও হিন্দু বাড়িতে তামাক আশায় স্টিলের বাসন ব্যবহার করার প্রচলন বহু পুরাতন। তবে এ ধরনের বাসন গুলোতে রয়েছে আভিজাত্য। তাই পূজায় খাবার পরিবেশনার জন্য স্টিল তামা,  কাশার  বাসনকেই প্রাধান্য দেওয়া উচিত।

Banner
Side banner
Side banner